জিন্স পরতে ভালোবাসেন না, বর্তমান প্রজন্মে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই বিরল। পুরুষ বা নারী, আট থেকে আশি সবাই জিন্সে ভীষণ আরামবোধ করেন। এখন নীল-কালো রং পেরিয়ে আরও নানা প্যাস্টেল শেড বা উজ্জ্বল রঙেও পাওয়া যায় জিন্সের প্যান্ট। 

যাই হোক, জিন্সের আজ যতই বয়স হোক, ক্যাজুয়ালের তকমা সেই যে তার কপালে জুটেছিল, এখনও তা যায়নি। ক্যাজুয়াল ওয়্যার হিসেবেই এ জিন্স শতক ধরে বাজার কাঁপাচ্ছে।

জিন্স প্যান্টে ছোট্ট পকেটের রহস্য

কখনো নন-স্কিনি বা কখনো স্কিনি হিসেবেই সবার মধ্যেই জনপ্রিয়। যাই হোক, এ পছন্দের জিন্স তো পরি, কিন্তু কয়েকটি বিষয় আমরা সবাই জানি না। যেমন জিন্সের ডান দিকে একটি ছোট পকেট কেন থাকে? এছাড়াও আপনি কি এটা জানতেন পৃথিবীর অধিকাংশ জিন্স নীল রঙেরই হয় কেন? জানতে পড়তেই হবে এ প্রবন্ধ। 

ডেনিম বা জিন্সের মজার ইতিহাস হলো এটি: 

এই জিন্স শব্দটি ফরাসি শব্দ থেকেই এসেছিল। ‘জিন ফাস্টেইন’ শব্দ থেকে এই শব্দের উৎপত্তি। সুতির কাপড়ের একটি বিশেষ ধরনকে বোঝাতে এ ধরনের শব্দ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই নিয়ে বিতর্ক আছে যে কবে প্রথম তৈরি হয়েছিল এই জিন্স?

অনেকেই মনে করেন ইতালির একটি শহরে প্রথম জিন্স তৈরি হয়েছিল ১৫ শতাব্দীতে, নাকি ফ্রান্সে প্রথম তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যেই অষ্টাদশ শতকে আমেরিকায় জিন্সের ব্যবহার শুরু হয়।

তাহলে এভাবেই তৈরি হয় ডেনিম:

ডেনিমের সুতো সবথেকে মজবুত ও টেকসই বলে মনে করা হয়। যা সুতো থেকে তৈরি করা হয়। যখন সুতি থেকে ডেনিম তৈরি করা হয়। তখন সেই কাপড় যথেষ্ট মজবুত হয়। তবে হ্যাঁ, এ কথাও জেনে নিন, ১০০ শতাংশ সুতি থেকেই সাধারণত জিন্স তৈরি করা হয়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আপনি যত ধরনের জিন্স পরছেন, তা সবই সুতি থেকেই তৈরি। কারণ জিন্স স্ট্রেচেবল করার জন্য তৈরির সময় এতে ইলাস্টিক মেটেরিয়ালও মেশানো হয়।

অধিকাংশ জিন্সই নীল রঙের, কেন:  

যদিও একই ধরনের ফ্রেব্রিক থেকে তৈরি প্যান্টও পরতেন অনেকে। তাকে বলা হতো ডাক ট্রাউজার। সেগুলো খয়েরি রঙের হতো। কিন্তু ডেনিমের সবথেকে জনপ্রিয় ও ব্যবহৃত রং নীল। এ ইন্ডিগো রঙের ডেনিমই সবথেকে বেশি পরতে দেখা যায়।

অন্যান্য প্রাকৃতিক রঙের থেকে এ ধরনের ইন্ডিগো রং একটু অন্যরকম ভাবে রিঅ্যাক্ট করে। যখন এ রং গরম করে একটি কেমিক্যালের সঙ্গে মেশানো হয়, তখন জিন্সের বাইরের সুতোয় এর রং লাগে। ধোওয়ার পর আবার রং অন্যরকম হয়ে যায়।

৫০ শতাংশ বেশি ডেনিম উৎপাদন হয় এশিয়ার এই দেশে: 

প্রথমে ইউরোপের দেশে তৈরি হলেও এবং আমেরিকায় এ ডেনিম ফ্যাশন মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেও বিশ্বায়নের সময়ে ডেনিম ফ্যাশন ভারতেও ছেয়ে যায়। 

কিন্তু আপনি কী জানেন, এখন বিশ্বের ৫০ শতাংশের বেশি ডেনিম উৎপাদন হয় এশিয়ার কয়েকটি দেশে। আর তার মধ্যে ভারতও আছে! না অবাক হওয়ার কিছুই নেই। এটাই বাস্তব। ভারত, বাংলাদেশ এবং চিনে সব চেয়ে বেশি ডেনিম উৎপাদন হয়।

জিন্সের ডানদিকে একটি ছোট্ট পকেট থাকে, কেন জানেন:

আমাদের অনেকের মনেই এ প্রশ্ন থাকে যে, জিন্সের ডানদিকের এই ছোট্ট পকেট কেন থাকে? আমরা এই পকেটটি অনেক সময় ব্যবহারও করি না। মাঝেমধ্য়ে ভাবি, এ অপ্রয়োজনীয় পকেট কেন থাকে, কী প্রয়োজন! আবার অনেকে ছোট কয়েন রাখেন অনেক সময়। কিন্তু এ ছোট্ট পকেটের পেছনে লুকিয়ে আছে অন্য কারণ।

এ ছোট ছোট পকেট এক সময়ে খুবই কাজে লাগত। পকেট ওয়াচ রাখার জন্য এ ধরনের পকেট তৈরি করা হত। পুরুষেরা সেই সময়ে ছোট ছোট পকেট ঘড়ি ব্যবহার করতেন। তা রাখার জন্যই এ পকেট তৈরি করা হয়েছিল।

লিভাইসের জিন্সে প্রথম এ পকেট ব্যবহার করা হয় ১৮৯০ সালে। না এখন আর কেউ পকেট ঘড়ি ব্যবহার করেন না। কিন্তু হ্যাঁ, জিন্সে এখনও এ পকেট দেয়া হয়।

সূত্র: এই সময়